সোমবার , ২০ জানুয়ারি ২০২৫ , ৭ মাঘ ১৪৩১
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒ বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ,শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত

চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড
প্রকাশ : শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর , ২০২৪, ০৫:১৪:০০ পিএম
স্বর্ণলতা ডেস্ক:
Shornolota_2024-12-13_675c258580399.JPG

❒ সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে ছবি:

চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। আজ শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৭ শতাংশ। সূর্যের দেখা মিললেও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।


চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশার সঙ্গে চুয়াডাঙ্গায় শীত পড়তে শুরু করেছে। এর আগে গত মঙ্গলবার এই জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন বুধবার তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দিনের ব্যবধানে গতকাল বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা কমে দাঁড়ায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর আজ শুক্রবার তাপমাত্রার পারদ আরও নিচে নেমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

শুক্রবার সকালে জেলা শহরসহ বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে দেখা গেছে, সকালে তীব্র শীত উপেক্ষা করে বাইরে বেরিয়েছেন দিনমজুর ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ। তবে ঠান্ডার কারণে কাঙ্ক্ষিত কাজ পাচ্ছেন না তাঁরা। আবার কাজ পেলেও চরম কষ্ট করতে হচ্ছে। খুব প্রয়োজন না হলে মানুষ সকালে বাইরে বের হচ্ছে না। অনেকে আবার জীবিকার তাগিদে তীব্র শীত উপেক্ষা করে বের হয়েছেন। কিছু কিছু স্থানে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে কেউ কেউ। গণপরিবহন চললেও যাত্রীর চাপ নেই। অনেকটা ফাঁকাই ছিল হাট-বাজার।


চুয়াডাঙ্গা শহরে প্রতি শুক্রবার বড় বাজারের হাট জমলেও আজ ক্রেতাদের তেমন ভিড় লক্ষ করা যায়নি। হাটে সবজি বিক্রি করতে এসেছিলেন গাড়াবাড়িয়া গ্রামের সেলিম মল্লিক। তিনি বলেন, ‘কষ্ট করে তো চলে এলাম, কিন্তু ক্রেতা কম। শীতে বাজার জমেনি।’

আরেক বিক্রেতা রমজান আলী বলেন, ‘এই শীতে এমনিতেই হাত কালা (ঠান্ডা) হয়ে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গায় শীতও বেশি, গমরও বেশি।’

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার একটি ইটভাটার শ্রমিক আলম আলী বলেন, প্রতিদিন ভোরে ইটভাটায় কাজে যেতে হয়। সেখানে আবার ইট তৈরি করতে কাদাপানির কাজ করতে হয়। শীত তো লাগেই, কিছু করার নেই। কাজে না গেলে সংসার চলবে না।

ইজিবাইকচালক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘জাড় (শীত) লাগছি। গাড়ি ভাড়া হচ্ছে না। হাত বরফ হয়ে যাচ্ছে। আবার হাওয়া-বাতাসও ফ্রিজের মতন। আমি যেমন-তেমন বাপু তোমার চাচির বয়স বেশি। শীতে ওনারে নিয়ে ভয় হচ্ছে।’

এদিকে তীব্র শীতে চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে বৃদ্ধ ও শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ। সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা নিচ্ছে এসব রোগী। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। তারা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, ‘শীতের সময় শিশুরা বেশি সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। তাদের শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে না পারলে নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি বা রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং অনিরাপদ খাবারও ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর হাসপাতালের বহির্বিভাগে তো রোগীদের উপচে পড়া ভিড়।’

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, শুক্রবার সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রিতে। তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে সেটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সে হিোবে চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলো।

তিনি আরও বলেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও কমে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর ১৬ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝