শিরোনাম |
❒ প্রথম দফা পেটানোর পর খাবার দেয়,তাও আবার ফেসবুকে পোস্ট করে খুনিরা
❒ বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি
প্রথম দফা পেটানোর পর তোফাজ্জলকে হল ক্যান্টিনে খেতে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ফেসবুকে তোফাজ্জলের খাওয়ার ছবি পোস্ট দিয়ে বলা হয়েছিল-হলের খাবারের স্বাদ তার ভালো লেগেছে। বুধবার দিবাগত রাত (১৮ সেপ্টেম্বর) ১২টার দিকে এসব ঘটনা ঘটে।
এরআগে রাত ৮টার দিকে তাকে আটক করে হলের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে রাত ২টার দিকে তার মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তোফাজ্জলের বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। জানা যায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৮টা-৯টার দিকে ফজলুল হক হলে তোফাজ্জলকে চোর সন্দেহে আটক করে শিক্ষার্থীরা। পরে ‘চোরের গ্যাং’ শনাক্ত করতে তাকে জেরা করা হয়। তিনি কয়েকজনের ফোন নাম্বার মুখস্ত বলেন, যেগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়। এতে তাকে ‘চোর’ হিসেবে উপস্থিত ছাত্রদের সন্দেহ বাড়ে। পরে তাকে একদফা পিটুনি দিয়ে ক্যান্টিনে খাওয়ানো হয়।
পরে দ্বিতীয় দফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও পেটানো হয়। রাত ১০টার দিকে হলের হাউস টিউটররা ঘটনাস্থলে গেলে অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কেউ চুরি করতে এলে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার কারও নেই। শিগগিরই মামলা করা হবে। আমরা সিসিটিভি ও অন্যান্য ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
এদিকে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
অন্যদিকে, যুবককে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে তদন্ত করতে কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুম ৭ সদস্যের এ কমিটি গঠন করেন। একই সঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীদের হল অফিসে এসে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা করার কথাও বলা হয়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন—আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীর। বাকি সদস্যরা হলেন—আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, অধ্যাপক ড. শেখ জহির রায়হান, মো. মাহাবুব আলম, ড. আছিব আহমেদ, সহকারী আবাসিক শিক্ষক ড. এম এম তৌহিদুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর (বিজ্ঞান অনুষদ) একেএম নূর আলম সিদ্দিকী। আজ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমাদানের জন্য অনুরোধ জানান অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুম।
হল অফিস থেকে এক পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘হলের সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গতরাতে (বুধবার) ফজলুল হক মুসলিম হলে সংগঠিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শীদের আজ দুপুর ১২টার সময় হল অফিসে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কমিটিকে সহায়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।
31794 এই রকম আরও টপিক