মঙ্গলবার , ২৯ এপ্রিল ২০২৫ , ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒ বন অধিদপ্তরের গোমর ফাঁস

মিলেমিশে কোটি কোটি টাকা লুটপাট
প্রকাশ : বুধবার, ৯ এপ্রিল , ২০২৫, ০৫:১৪:০০ পিএম
স্বর্ণলতা ডেস্ক:
Shornolota_2025-04-09_67f656e89c8ad.JPG

পরিবেশ ও বন রক্ষায় সরকারের নেওয়া টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের দেড় হাজার কোটি টাকার বেশির ভাগই লুটপাট হয়েছে। বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে এই লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনে ‍এসব তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন বন অধিদপ্তরের অনিয়মসংক্রান্ত এই প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিয়েছেন।

মিলেমিশে লুটপাট কোটি কোটি টাকা
১৫০০ কোটি টাকার বেশির ভাগই লুটপাট হয়েছে।
সম্প্রতি দুদকের এক প্রতিবেদনে ‍এ তথ্য উঠে এসেছে।
অধিদপ্তরে বদলি, পদোন্নতিতে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।
এসব অনিয়মে প্রধান বন সংরক্ষকের সংশ্লিষ্টতা ছিল।
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে: দুদক মহাপরিচালক।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ১ হাজার ৫০২ কোটি টাকা ব্যয়ে টেকসই বনায়নের জন্য ‘সুফল’ প্রকল্প হাতে নেয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বাস্তবায়িত হয়নি প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ।

দুদকের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের অধীনে গত দুই অর্থবছরে ৮৭২ হেক্টর নার্সারি ও বনায়ন করার পরিকল্পনা থাকলেও উল্লেখযোগ্য অংশে তা করা হয়নি। কিছু এলাকায় শুধু সীমানা নির্ধারণের জন্য সামান্য চারা লাগানো হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা বিট এলাকায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫১০ হেক্টর বনভূমিতে নতুন বাগান সৃজনের বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে মাত্র ১৬০ হেক্টরে বনায়ন হয়েছে। একইভাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৩৬২ হেক্টর বনায়ন প্রকল্পেও অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে।

দুদক সূত্রটি জানায়, বনায়নের প্রকল্পের বেশির ভাগ অর্থই কাজ না করে আত্মসাৎ করেছেন বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ছাড়া বন অধিদপ্তরে বদলি, পদোন্নতিসহ নানা দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে কমিশন।

দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্পে অর্থের অপচয় ও আত্মসাতে প্রধান বন সংরক্ষকের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। এ ছাড়া বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি ও পদোন্নতি ‘বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলিসংক্রান্ত নীতিমালা, ২০০৪’ অনুসারে হওয়ার কথা থাকলেও তা অনুসরণ করা হয়নি। বিভিন্ন বন বিভাগের রেঞ্জ ও স্টেশন পোস্টিংয়ে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বদলি ও পদায়নের সত্যতা মিলেছে বলে জানায় দুদক সূত্রটি। এসব অনিয়মের ক্ষেত্রে প্রধান বন সংরক্ষকের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতার অভাবে গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া প্রধান বন সংরক্ষকের প্রশাসনিক কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতার অভাব রয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।’

এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসাইন চৌধুরীর মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। পরিচয় দিয়ে বক্তব্য নেওয়ার কথা জানিয়ে খুদে বার্তা পাঠালেও তাঁর সাড়া মেলেনি।

উপপ্রধান বন সংরক্ষক এবং সুফল প্রকল্পের পরিচালক গোবিন্দ রায়ের মোবাইল ফোনে গত ২ মার্চ থেকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি। বক্তব্য নিতে খুদেবার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি তিনি।

দুদক সূত্রটি জানায়, বন অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম এতটাই প্রকট যে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে দায়িত্বশীলতার সংকট দেখা দিয়েছে। বদলি ও পদায়ন নীতিমালার লঙ্ঘন এবং দুর্নীতির বিস্তারের ফলে বন অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বন বিভাগের প্রকল্পে অনিয়মসংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে বন অধিদপ্তরে অভিযান পরিচালনা করে দুদক।

সার্বিক বিষয়ে দুদক মুখপাত্র ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘বন অধিদপ্তরের অনিয়মসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।’

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝