শিরোনাম |
❒ শর্তের বেড়াজালে বাংলাদেশ
৩ শর্তে সুশাসন নিশ্চিতসহ দুর্বল আর্থিক খাত সংস্কারে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। এ জন্য শর্ত ৩টি বাধ্যতামূলকভাবে মানতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে সংস্থাটি।
সংস্কারের মধ্যে রয়েছে-ব্যাংকের ইউনিফাইড বেনিফিশিয়ারি ওনার্সশিপ (ইউবিও) কারা (শেয়ার মালিক) তা প্রকাশ করতে হবে। সব ধরনের ব্যাংকগুলোকে ইউবিও তালিকা প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সংজ্ঞা নির্ধারণে (এনপিএল) তালিকায় থাকতে হবে। পাশাপাশি দেশের সব ব্যাংকগুলোকে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনার শর্ত দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, সংস্কারের জন্য অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ (একিউআর) করতে হবে। ইতোমধ্যে শুদ্ধাচার ফেরাতে শর্ত পরিপালনে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছে। তবে, আইএমএফ এখনো কোনো শর্ত দেয়নি। প্রতিনিধিদল ফেরত যাওয়ার পরে অর্থায়নের বিষয়ে জানাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের গভর্নর ব্যাংক খাত সংস্কারে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছেন। আপাতত তিনটি শর্তের বিকল্প দেখছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যা নিদের্শনার আলোকে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদল গতকাল শনিবার বাংলাদেশ ব্যাংক পারিদর্শন করেছে।
বিশ্বব্যাংকের শর্ত সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও মুখপাত্র হোসনে আরা শিখা বলেন, ব্যাংক খাত সংস্কারে এক বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। আরো কিছু কাজের পাশাপাশি অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ করতে হবে। তবে, আইএমএফ এখনো কিছু জানায়নি। তারা ফেরত গিয়ে অর্থায়নের বিষয়ে জানাবে।
অন্য একটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ চায় চার বিলিয়ন ডলার। কিন্তু আইএমএফ তিন বিলিয়ন ডলার দিতে চায় বলে তথ্য জেনেছি। যদিও তারা ফেরত গিয়ে এর পরিমাণ জানাবে বলে জেনেছি।
পাঁচ ব্যাংকের তারল্য সমাধান সম্পর্কে হোসনে আরা শিখা বলেন, কিছু সবল ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে অর্থায়ন করতে চায় না। ইতোমধ্যে পাঁচ ব্যাংকের চুক্তি হয়েছে। আজকেই (গতকাল) বিকেলে হওয়ার কথা রয়েছে। না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
একইসঙ্গে আট ব্যাংকের এমডির নিয়োগের ব্যাপারে হোসনে আরা শিখা বলেন, এটা গভর্নরের বিষয়। আমাদের সরকারপ্রধান দেশে ফিরলেই একটি সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এদিকে, বিশ্বব্যাংকের দুটি সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে গতকাল শনিবার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, শর্ত সাপেক্ষে সব ধরনের সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স কর্পোরেশন (আইএফসি)। এ অর্থ পাওয়া গেলে ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংস্কারে ব্যয় হবে।
যদিও ঋণ সহায়তার পরিমাণ কত তা জানাননি অর্থ উপদেষ্টা। আসন্ন অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংকের বৈঠকে ঋণের পরিমাণ চূড়ান্ত হবে বলে জানানো হয়েছে।
অবশ্য, এর আগে গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিশ্বব্যাংক সাড়ে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভিন্ন খাতে সংস্কার সহযোগিতায় বাংলাদেশকে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা। বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে এই ঋণ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।