শিরোনাম |
❒ নিহতের দুই মেয়ের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড-চান দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
যশোরের অভয়নগরের ভাটপাড়া গ্রামে গরুর খাবার আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন সবিতা রাণী দে (৫৩) নামের এক গৃহবধূ। অনেক খোঁজাখুজির পর মরদেহ উদ্ধার পাওয়া গেল প্রতিবেশি রাজমিস্ত্রির সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে।
নিহত সবিতার দুই মেয়ে শুক্লা দে ও বৈশাখী দে বলেন, ‘আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে গুম করার উদ্দেশ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই কাজের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করছি।’। তারা ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। |
নিহত সবিতা রাণী দে ভাটপাড়া গ্রামের মিলন কুমার দে’র স্ত্রী। মিলন কুমার পেশায় চা বিক্রেতা। উপজেলার ভাটপাড়া বাজারে মিলন কুমারের একটি চা এবং সিঙাড়া-পুরির দোকান রয়েছে।
মিলন কুমার দে’র ভাগনে তাপস কুমার দে বলেন, মামি সবিতা রানি দে এবং মামা মিলন কুমার দে’র দুই মেয়ে। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। মামা ও মামি দুজনে বাড়িতে থাকতেন। তাদের দুটি গরু আছে। গত সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে তারা দুজন বাড়িতে সকালের নাস্তা করেন। এরপর দুপুরের খাবার নিয়ে মামা দোকানে চলে গেলে সকাল ৯টার দিকে মামি ঘরে তালা দিয়ে একটি ঝুড়ি নিয়ে গরুর খাদ্য বাঁশের পাতা সংগ্রহ করতে পাশের বাঁশবাগানে যান। এরপর থেকে তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। দুপুরে কয়েকবার ফোন করে মামিকে না পেয়ে মামা পাশের বাড়ির এক গৃহবধূকে বিষয়টি জানান। তিনি বাড়িতে গিয়ে ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। ওই নারী প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানালে তার খোঁজ শুরু করেন। এলাকার লোকজন বাঁশবাগানে গিয়ে তার মাথার খোঁপা এবং কয়েকটি বাঁশের পাতা পড়ে থাকতে দেখেন। গভীর রাত পর্যন্ত অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
নিহতের স্বামী মিলন কুমার দে বলেন, ‘সোমবার সকালে যখন দোকানে যাই তখন সবিতা গরুর খাবার সংগ্রহ করতে বাড়ির পাশের একটি বাঁশবাগানের দিকে চলে যায়। দুপুরে ফোন করলে সবিতার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। দ্রুত বাড়ি ফিরে দেখি ঘরের দরজা তালাবদ্ধ। এ সময় প্রতিবেশী ও স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। রাত অবধি সবিতার কোনো সন্ধান না পেয়ে স্থানীয় ভাটপাড়া পুলিশ ক্যাম্পে বিষয়টি জানাই। পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে অভয়নগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করি। এদিন রাত ৭টার দিকে জানতে পারি সবিতার মরদেহ রাজমিস্ত্রি নিয়ামুলের বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিবেশী পরিমল রায় জানান, খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাজমিস্ত্রি নিয়ামুল ইসলামের সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনার এক পাশ উঁচু দেখে সন্দেহ হয়। এ সময় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ওই ট্যাংকের ঢাকনা খোলা হলে ভেতরে সবিতার মরদেহ দেখা যায়। খবর পেয়ে অভয়নগর থানার পুলিশ সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
অভয়নগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আকিকুল ইসলাম বলেন, ভাটপাড়া গ্রামের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে গৃহবধূ সবিতা রাণী দে’র মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।