শিরোনাম |
❒ ৮০’র দশকে নির্মিত ১৭টি বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ
খুলনার উপকূলীয় উপজেলা দাকোপে ষাটের দশকে নির্মিত ১৭টি বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, সংস্কার না হওয়ায় প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগে বাঁধগুলো মাঝে মাঝে ভেঙে লবণাক্ত পানি ঢুকে গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে যায়। স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধগুলো মেরামত করা হলেও তা টেকসই হয় না। প্রতিবছরই বাঁধ ভাঙে, অস্থায়ী মেরামত হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এসব বেড়িবাঁধের কারণে ৫০ গ্রামের মানুষের দিন কাটে শঙ্কায়। যেকোনো সময় এসব বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে বিস্তীর্ণ এলাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে নদ-নদীর পানি ৩ থেকে ৫ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব বাঁধ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে উপজেলার পাউবোর ৩১ নম্বর পোল্ডারের আওতায় তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের গড়খালী আন্ধার মানিক, ঝালবুনিয়া, বটবুনিয়া বাজার, পশ্চিম কামিনী বাসিয়া, মোজামনগর, পানখালী ইউনিয়নের পানখালী ফেরিঘাটের পূর্ব পাশে, মৌখালী স্লুইচগেটের পশ্চিম পাশে, খোনা চালনা পৌরসভার মেঝ খলিশা, চালনা মেরীন প্রোডাক্টস লিমিটেডের দক্ষিণ পাশে; ৩২ ও ৩৩ নম্বর পোল্ডারের সুতারখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কালাবগী আমিনুর সানার বাড়ির সামনে, নলিয়ান লুৎফর সানার মৎস্যঘেরের সামনে, লতিফ সানার বাড়ির সামনে, গুনারী কালিবাড়ী লঞ্চঘাটের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে, কামারখোলা ইউপির জালিয়াখালী, ভিটেভাঙ্গা, বাজুয়া চুনকুড়ি খেয়াঘাটের পশ্চিম পাশে, পোদ্দারগঞ্জ বাজারের পশ্চিম পাশে, বানিশান্তা আমতলা গ্রামের বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময়ে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে অর্ধশতাধিক গ্রাম।
পশুর নদে বসতবাড়ি ও ভিটেমাটি হারিয়ে সর্বস্বান্ত পানখালী গ্রামের কৃষক প্রীতিষ রায়, খোকন রায়, শ্যামল রায়, গোবিন্দ রায়, জিতেন্দ্র নাথ রায়, দীপক রায়, নিখিল রায়। তাঁরা বলেন, নদীভাঙনের কারণে মানচিত্র থেকে ক্রমান্বয়ে ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে দাকোপ। নদীভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে অনেকে চলে গেছেন জীবন-জীবিকার সন্ধানে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তাঁরা মাটি আঁকড়ে এখনো লড়াই করে যাচ্ছেন। বাঁধ ভেঙে গেলে তাঁরা কোথায় যাবেন, সেই দুশ্চিন্তায় আছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, নদ-নদীতে হঠাৎ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি বৃদ্ধির কারণে কিছু এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে ভাঙনকবলিত স্থানে পাউবো তদারকির পাশাপাশি সংস্কারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। উপকূলবাসীকে রক্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ সব বাঁধ শিগগিরই সংস্কার করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো দ্রুত সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্টদের বলেছি।’